প্রথমে আসা যাক কন্টেন্ট মার্কের্টিং কি। আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন সে সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা প্রয়োজন।কন্টেন্ট মার্কের্টিং একটি কৌশলগত মার্কের্টিং শৃঙ্খলা যেখানে ওয়েব কন্টেন্ট একটি স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত শ্রোতাদের আকর্ষণ করার লক্ষ্য নিয়ে তৈরি করা হয়। একটি বিষয় বা বস্তু কে কেন্দ্র করে ওয়েবসাইট,ব্লগ, ইমেজ বা ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে তার আকর্ষণীয় বর্ণনা করে তা ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। অনলাইন ইনকাম বৃদ্ধি বা অনলাইনে আয় বাড়ানোর জন্য কন্টেন্ট মার্কের্টিং এর বিকল্প নেই।
কন্টেন্ট মার্কের্টিং কি , কাকে বলে, সংজ্ঞা,
বলা চলে বিভিন্ন পণ্যের বা সেবার ডিজিটাল বিজ্ঞাপনও কনটেন্ট মার্কেটিং। ব্লগিং এর মাধ্যমে পণ্য বা সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা, অনলাইনে ছবি বা পোস্টারিং অথবা ভিডিও মাধ্যমে পণ্য বা ব্র্যান্ডের প্রচারণাকে কন্টেন্ট মার্কেটিং হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে।
কন্টেন্ট ব্লগ, ওয়েবসাইট, মিডিয়া ওয়েবসাইট, সামাজিক মিডিয়া চ্যানেল বা ইমেল নিউজলেটারগুলিতে প্রদর্শিত হতে পারে। আবার অডিও ভিডিও কন্টেন্টও হতে পারে।বর্তমান সময়ে ভিডিও কন্টেন্ট সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য। আজকাল মার্কের্টিং মানেই ভিডিও প্রচারণা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নির্দিষ্ট লক্ষের ভিজিটরদের নিকট তথ্যবহুল কন্টেন্ট পৌঁছে দেয়ার মাধ্যমে তাদেরকে ব্র্যান্ডের প্রতি আকৃষ্ট করা, দুর্বলতা সৃষ্টি করা, এটার প্রতি মনোনিবেশ করানো,সর্বোপরি সাপোর্ট পাওয়াই হল কন্টেন্ট মার্কেটিং।”
মানুষজন এখন বিজ্ঞাপন দেখতে পছন্দ করেনা। তাই চমৎকার তথ্য সমৃদ্ধ কন্টেন্টের মাধ্যমে তাদেরকে পণ্যের ব্যাপারে আকৃষ্ট করতে হয়। অনলাইন মার্কেটপ্লেস গুলোতেও আছে এই কাজের প্রচুর চাহিদা।
এড দিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট না করে কন্টেন্ট দিয়ে কাস্টমারদের আকৃষ্ট করাই কন্টেন্ট বিপণন বা মার্কেটিং এর মূলকথা।
আপনার পণ্য বা সেবা সম্পর্কে কাস্টমারদের জানাতে কন্টেন্ট বিপণন বা মার্কেটিং অপরিহার্য।
বিজ্ঞাপন, ইমেইল মার্কেটিং, ফেসবুক বুস্ট, ইউটিউব ভিডিও সবকিছুতেই প্রয়োজন আকর্ষণীয় ও গ্রহণযোগ্য কন্টেন্ট। একটি ভালো কন্টেন্ট ব্লগ বা ওয়েবসাইটে দিন দিন ভিজিটর বাড়াতে সক্ষম।
আর্টিকেল মার্কেটিং : অনলাইন ইনকাম
আর্টিকেল মার্কেটিংও সহজ না। অনেক টিপস এবং টেকনিক জানতে হয়। অনুসরণ করতে হয় বহু নিয়মনীতি। নিম্নমানের আর্টিকেল কেউ ধের্য্য ধরে পাঠ করবে না। আজকাল বাংলা কন্টেন্ট রাইটিং করে উচুমানের ব্লগ তৈরি করে অনেকে অনলাইনে আয় করছেন।
নিচের নিয়মগুলো অনুসরণ করলে আপনি কন্টেন্ট বা আর্টিকেল মার্কের্টিং এ সুফলপাবেন। আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। অনলাইন ইনকাম এর জন্য আপনার ভাবতে হবে না। ধীরে ধীরে মার্কেটপ্লেসগুলোতে আপনার আর্টিকেলের দাম বাড়তে থাকবে।
১. সরাসরি আর্টিকেল ট্রাফিক অপট-ইন পেজ:
১ নাম্বার খুব গুরুত্বপূর্ণ। নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায় ট্রাফিক। একজন ব্লগার হিসেবে আপনি এটা করতে পারেন। যদিও সময় সাপেক্ষ, তবে লাভজনক।অধিক ফলাফলের জন্য আপনি এই কৌশলটি কা লাগাতে পারেন।
ব্লগ গুরু রা এটার বিরোধীতা করবে জেনেও আমি পরামর্শ দেই। অটোরেসপন্ডার চালু করে আপনি অনেক ভিজিটর ধরে রাখতে পারেন।গ্রাহক ও পাঠক। এভাবে আপনার একটি ভিজিটরের বড় তালিকা পাবেন।
০২. টার্গেট স্পেসিফিক কী ওয়ার্ড প্রেরেইস( Target Specific Keyword Phrases)
স্পেসিফিক কী ওয়ার্ড, সম্পকীয় ওয়ার্ড খুব গুরুত্বপূর্ণ। এতে র্যাংiক ভাল হয়।
গুগল কীওয়ার্ড টুল এ চেক করে পাওয়া হাই ডিমান্ড কিন্ত লো কম্পিটিশান কী ওয়ার্ড এবং Phrases ব্যবহার হবে আর্টিকেলে। আর্টিকেলে Phrases যেখানে ফিট হয় সেখানে বসানো হবে।
মূল কীওয়ার্ড শুরুতে এক বার, বডিতে ১/২বার এবং উপসংহারে একবার সবোর্চ্চ ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশি করলে গুগল বিরক্ত হয়। বুঝতে পারে না কীওয়ার্ড কোনটি।
আর্টিকেল লেখার নিয়ম নীতি জানতে পড়ুন: আর্টিকেল লেখার নিয়ম
০৩. মনে রাখবেন আর্টিকেল মার্কেটিং আর ব্লগিং এক নয়।
০৪. ব্যবহার করুন কিলার হেডলাইন
প্রতিটি আর্টিকেলকে একটি মিনি বিজ্ঞাপন হিসেবে ভাবুন। সব বিজ্ঞাপনের মত মানুষের দৃষ্টি আকর্ষন যাতে হয়।সে কারণে কয়েক মিনিট বেশি সময় নিন কিলার হেডলাইন লিখতে।
০৫. ইউনিক আর্টিকেলের প্রতিটি প্যারাগ্রাফকে ৪০০-৬০০ওয়ার্ডের মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন। কিন্ত এসইও এর জন্য ৩০০-৪০০ শব্দ রাখতে পরামর্শ দেয়া হয়। আর্টিকেল মার্কেটিং এর জন্য আর্টিকেল নিজেই কাজ করবে যদি এ সব নিয়ম মানা হয় লিখতে।
০৬. আর্টিকেল লেখকের বায়োডাটা ও ছবি দিলে ভিজিটররা খুশি হয় এবং অন্যান্য আর্টিকেল পড়ার চেষ্টা করেন।
১১।স্লাইড শেয়ারে বিভিন্ন দৃষ্টি নন্দন কন্টেন্ট পোস্ট করুন :
স্লাইড শেয়ার একটি জনপ্রিয় ভিজুয়াল কন্টেন্ট শেয়ারিং সাইট।অনেকেই এটা সম্পর্কে জানে।পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন, পিডিএফ, কি-নোট, ওপেন ডকুমেন্ট প্রেজেন্টেশন ইত্যাদি শেয়ারিং জন্য একটি উৎকৃষ্ট প্লাটফর্ম।এটাকে আপনি স্লাইডের ইউটিউব বলতে পারেন।
স্লাইডশেয়ারে একবার কন্টেন্ট পোস্ট করলে আপনার মার্কেটিং এর কোন সীমা নাই।এখান থেকে ইউজার রা আপনার কন্টেন্ট শেয়ার, রি-শেয়ার, এবং অন্যান্য প্লাটফর্ম এ লিঙ্ক শেয়ার করতে পারে ইচ্ছামত। যেমন লিঙ্কডিন, ফেইসবুক, টুইটার, গুগল প্লাস যা থেকে ট্রাফিক আসবে প্রচুর।
০৭. সঠিক ফরম্যাটে আর্টিকেল লেখার চেষ্টা করুন।
• প্রথম প্যারাগ্রাফে টপিক নিয়ে পরিচিত মূলক লেখা থাকবে।
• প্রধান কীওয়ার্ড থাকবে দ্বিতীয় প্যারার শুরুতে ‘কিভাবে” দিয়ে-বোল্ড হবে।
• এর পর ৩/৪ প্যারায় কোয়ালিটি বর্ণনা ও তথ্য থাকবে।
• পাঠকের মনযোগ আকর্ষনের জন্য কীওয়ার্ড বরাবরই বোল্ড থাকবে
• উপসংহারে শেষ বারের মত একবার কীওয়ার্ড ব্যবহৃত হবে। পুরো আলোচনার সারাংশ টানা হবে।
•
২।আপনার পোস্টে ভিডিও এড করুন :
ভিডিও ছাড়া আর্টিকেল এর প্রতি মানুষ খুব আগ্রহী হয় না। বিভিন্ন বিষয় বোঝাতে ভিডিও ব্যবহার করুন। যেসব লেখায় ভিডিও সংযুক্ত করা সে সব লেখা বা কন্টেন্ট থেকে অনলাইন ইনকাম বা অনলাইনে আয় পাওয়া যায় বেশি। ভিডিওর পাশে বিজ্ঞাপন থাকলে সেখানে ভিজিটর ক্লিক দেন।
০৪. আর্টিকেলে ইনফোগ্রাফিক্স যুক্ত করুন।
আরো পড়ুন : আর্টিকেল লিখে টাকা আয় করার মাধ্যম গুলো কি কি ?
০৮. লেখায় কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হয়। সব কছু বলে দিলেতো হয় না। পাঠকের মাথা থেকে কিছু বের হবার প্রশ্ন করার সুযোগ রাখতে হবে। সব প্রশ্নের উত্তর দেয়া চলবে না। অসম্পূর্ণ তথ্য ক্লিক বাড়ায়।
মন্তব্য কলামে কি জানতে চাইবে –সব যদি লিখে দেয়া হয়।
০৯. আর্টিকেলের শুরুতে আর্টিকেলে কি কি থাকছে সে রকম একটা তালিকা দিতে হবে।
১০।নিজেকে কমিউনিটির মধ্যে প্রতিস্থাপন করুন :
আপনার আর্টিকেল ভিভিন্ন ফোরাম ও গ্রুপে ফোরেন্স হিসেবে সাবমিট করুন।
১০. ভিউ কম হওয়া আর্টিকেল থেকে শিক্ষা নিন। প্রয়োজনে টাইটেল থেকে শুরু করে পুরো আর্টিকেল রিচেক করুন। পরিবর্তন আনুন।দেখবেন রিইউজ আর্টিকেল ঘুরে দাড়িয়েছে।
১১. কন্টেন্ট ম্যাপিং ভিত্তিক কাস্টমার জার্নি( ভিজিটরদের অবস্থানের ভিত্তিতে) কন্টেন্ট তৈরির চেষ্টা
কন্টেন্ট ম্যাপিং ভিত্তিক কাস্টমার জার্নি( ভিজিটরদের অবস্থানের ভিত্তিতে) কন্টেন্ট তৈরির চেষ্টা করুন।
১২. আর্টিকেলকে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে ভুলবেন না। যতবেশি শেয়ার হবে তত লাভ ও ভিজিটর বাড়বে সাইটে।
বাংলা আর্টিকেল লিখে আয় করার সাইট
বাংলাদেশি বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং ও আর্টিকেল সাইট এ আর্টিকেল লিখে আয় পেমেন্ট বিকাশ নেয়া যাচ্ছে। ছোট বড় বাংলা আর্টিকেলের জন্য ৬০টাকা থেকে শুরু করে ২০০/৩০০/৪০০টাকা পর্যন্ত লেখকদের সম্মানী দেয়া হয়। আর্টিকেল ভিত্তিক ব্লগ বা ওয়েবসাইট তারা উপরোক্ত অফার গুলো করছে। পত্রিকায় গল্প কবিতা লিখে বিকাশে পেমেন্ট নেয়া যাচ্ছে আজকাল। বাংলাদেশের প্রথমশ্রেণীর বাংলা পত্রিকাগুলো কবি ও বাইরের লেখকদের বিকাশে পেমেন্ট করে থাকে।
অনলাইন ইনকাম বৃদ্ধি বা অনলাইনে আয় করার জন্য আরো বহু রকমের পথ রয়েছে। আশা করি বন্ধুরা কন্টেন্ট মার্কেটিং কি ও আর্টিকেল মার্কেটিং করার জন্য আলোচ্য নিয়মনীতি গুলো যথাযথভাবে অনুসরণ পারলে আপনার আর্টিকেল অবশ্যই সাকসেস হবে। পাবে পাঠক প্রিয়তা। ধন্যবাদ।
মাস্ক ব্যবহার করুন, নিজে নিরাপদে থাকুন।